বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে গত দুই মাসে ৪৭ জন আহত হয়েছে। মার্চ ও এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ৪৭জনকে কামড়িয়ে আহত করেছে বেওয়ারিশ কুকুর।
রাতের বেলা কিছু এলাকা এসব বেওয়ারিশ কুকুর দখল করে নেয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এ তথ্য জানা গেছে। পৌরসভা ইতিমধ্যে কিছু পাগলা কুকুর নিধন করেছে।
বোয়ালমারী পৌর এলাকা সরকারি কলেজ রোড, ওয়াপদা মোড়, শিবপুর রেলগেট, হেলিপ্যাড এলাকা, রেল স্টেশন এলাকা, ছোলনা গোরস্থান মোড়, ছোলনা রেলগেট, ফায়ার সার্ভিস, মাংস বাজার, সাব রেজিস্ট্রি অফিস এলাকা, সোনালী ব্যাংক মোড়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এলাকা, আঁধারকোঠা মোড়সহ কিছু এলাকায় শতাধিক বেওয়ারিশ কুকুর দেখা যায়। এসব কুকুর এক সাথে দল বেঁধে চলে।
লোকজন দেখলে দল বেঁধে আবার কখনও এককভাবে হামলা করে। বেওয়ারিশ কুকুরের ভয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাসহ বয়স্ক লোকজনও পথ চলতে ভয় পাচ্ছে। গোরস্থান এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক হাসিনা মমতাজ বলেন, কুকুরের ভয়ে অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে। স্কুলে পাঠানোর পরে দুশ্চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা। তিনি আরও জানান, তাঁর বাসার মোড়ে একটি কুকুর এক পথচারিকে পুরো ফিল্মী স্টাইলে কাঁমড়িয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। যা দেখে তিনি অবাক হয়ে গেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিক্লনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালেদুর রহমান বলেন, কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে গত মার্চ মাসে ১৫জন এবং ১ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৩২জন মোট ৪৭জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের এখানে ভ্যাকসিন নেই। তবে কুকুরের কামড়ে আহত সবাইকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়। কেউ কেউ ফরিদপুর গিয়ে বা স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয় করে ভ্যাকসিন নিয়ে থাকেন। বিষয়টি পৌর মেয়রসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা প্রণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারাণ চন্দ্র সরকার বলেন, ইতিপূর্বে আমরা অনেক কুকুর নিধন করেছি। বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর উচ্চ আদালতে রিট করায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে কুকুর নিধন করা হচ্ছে না। তবে কোন কুকুর যদি পাগল হয়ে যায়, সেই কুকুরকে তাৎক্ষণিক মেরে ফেলা যায়। তিনি আরও বলেন, পাগলা কুকুরে কামড়ালে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নিতে হবে। তা নাহলে সে অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে।
বোয়ালমারী পৌরসভার মেয়র সেলিম রেজা লিপন মিয়া বলেন, ইতিপূর্বে কিছু পাগলা কুকুর চিহ্নিত করে নিধন করা হয়েছে। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুকুর নিধন অভিযান বন্ধ রয়েছে। পাগলা কুকুরের উৎপাত অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে নিধন কার্যক্রম চালানো হবে। এছাড়া কুকুরের কামড়ে আহতদের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পৌরসভা থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।